
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে গোসলে নেমে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আর জেলার বিভিন্ন স্থানে আরও ৫০ জনের অধিক মানুষ পানিতে ডুবে মারা গেছে। এর মধ্যে কুতুবদিয়া, উখিয়া ও রামু উপজেলায় সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিচার্স বাংলাদেশ-সিআইপিআরবি এ তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটি পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে কাজ করে থাকে। ২০১৪ সাল থেকে সংস্থাটি কাজ করছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে।
সি সেইফ প্রকল্পের মাঠ কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, ২০১৪ সাল থেকে গেল প্রায় ১০ বছরে ৬৪ জনের মৃত্যুর তথ্য রয়েছে তাদের কাছে। যারা প্রত্যেকেই সৈকতে গোসলে নেমে ভেসে গিয়ে মারা গেছে।
তিনি বলেন, এ সময় ৭৯৫ জনকে পানি থেকে জীবিত উদ্ধার করেছে সি সেইফ লাইফগার্ড।
তবে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে নিয়মিত যে পরিমাণ পর্যটক থাকে তাতে এই বেসরকারি লাইফগার্ড খুবই অপ্রতুল। সরকারি ছুটির দিন ও যেকোনো উৎসবের ছুটিতে পর্যটকের সংখ্যা পার হয় লাখের অধিক।
ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, সৈকতে যে পরিমাণ পর্যটক ছুটিতে আসে মাত্র ২৭ জন লাইফগার্ড কর্মী দিয়ে সেটি মোকাবিলা সম্ভব না। তাও আবার দুই সিফটে ভাগ হয়ে ১৩ জন করে তারা দায়িত্ব পালন করেন। যা খুবই অপ্রতুল।
এ বিষয়ে সমাজকর্মী ও পর্যটন উদ্যোক্তা কলিম উল্লাহ বলেন, সরকারের উচিত বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগে সৈকতে লাইফগার্ড সেবা চালু করা। এ ছাড়া কোথায় গোসলে নামবে এবং কোথায় গোসলে নামা যাবেনা সেটি নির্ধারণ করে দেওয়া।
ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন গন্তব্য কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ঘিরে বারবার পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লেও প্রতিরোধে সরকারি কোনো উদ্যোগ নেই। একটি সৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটি থাকলেও তারাও এতে উদ্যোগী নন। যারা কেবল ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাফিস ইনতেসার নাফিও এ ব্যাপারে তেমন কিছু জানাতে পারেনি।
তিনি বলেন, ‘একটি বেসরকারি সংস্থা কাজ করছে, আমরা তাদের ক্যাপাসিটি বিল্ডিংসহ অন্যান্য বিষয়ে কিভাবে আগানো যায় তা নিয়ে ভাবছি।’
জাতিসংঘের হিসাবে বিশ্বে প্রতিবছর দুই লাখ ৩৫ হাজার মানুষ প্রতি বছর পানিতে ডুবে মারা যায়। তারমধ্যে বাংলাদেশে ১৯ হাজার মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়। গড় হিসাব করলে দেশে প্রতিদিন ৫০ জন মানুষের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে ৪০ জনই শিশু।
পাঠকের মতামত